Posts

Showing posts from August, 2016
Image
_______________সমুদ্র স্নান____________ সবাই দলবেঁধে ছুটে আসে সমুদ্র দেখতে একটু স্নান করতে। সমুদ্রের সঙ্গে খেলা করতে। সৈকতের ধার দিয়ে হাঁটা, উপদ্রবহীন, আরো একটু কাছ থেকে দেখা। সমুদ্রের ঢেউয়ের সাথে যুদ্ধ করতে বেশ লাগে। নিজেকে বীর মনে হয়। হাতে বিয়ারের ক্যান আর সিগারেটের ধোঁয়ায় নিজেকে মত্ত করে পাল্লা দিই সমুদ্রের উদ্দামতার সাথে স্টিয়ারিং কখন ঘুরে যায় কোন দিকে বোঝার উপায় থাকে না। উদ্দামতায় উন্মত্ততায় হার মানে সমুদ্র মৃত্যুকে আমন্ত্রণ... সমুদ্র হতে পারে উদ্দাম, তোমার উদ্দামতা এফোঁড়-ওফোঁড় করে দখিণা বাতাস। ভেঙেছ নিরন্তর স্তব্ধতাকে... সমুদ্র শক্তিশালী তবু অতটা ঘাতক নয়... ©  বাসব চক্রবর্ত্তী  © ২২/০৮/২০১৬
Image
____________অভিমানী_____________ অনেক বলেছি অভিমানে, আর না। ছোট ছোট টুকরোতে বন্দী করেছ, আর কত? আর কত টুকরো করবে? মনে জমা অবসাদ ঝরে পড়েছে তোমার স্মৃতির আচমকা দোলাতে। উল্টানো আমিকে নিয়ে সব ফুটবল খেলছ সমসাময়িকতার সাথে মিল টানা, কিছুটা অতিরিক্ত সরলীকরণ। ফলে ছন্দপতন ঘটে যায় মুহূর্তে। আমি আজ আমার ঠিকানাতেই চিঠি লিখি আকাশের ঠিকানাটা জানা নেই যে। পোষ্ট বক্সে নষ্ট হবার চেয়ে আমার কাছে ফিরে আসুক। আমাকে তো আগেই ভুলেছ, এবার আমার পালা লাস্ট ট্রেনে ফিরতে দৌড়েছিলাম... মচকানো পা নিয়ে এখনো খুঁড়িয়ে চলি, তার থেকে নিস্তার নেই নিস্তার নেই স্মৃতির ছোবল থেকে। ভুলতে চাইছি, এমন মোহ আগেও কাটিয়েছি ভুলে যাবো ঠিকই ভুলে যাবো... একটা প্রশ্নঃ আরো কত ছোট করে নেবো নিজেদের? © বাসব চক্রবর্ত্তী © ২৫/০৮/২০১৬
রাত পোহালেই একুশে চোখের কোণে দু-ফোঁটা জল সালাম-বরকতদের সেলাম। ভাষার জন্য রাস্তা ভেসেছিল সেদিন, তাঁদের তাজা বুকের রক্তে। লুটিয়ে পড়েছিল রাজপথে। ভাষার জন্য আজ আমাদের লজ্জা হয় ভাষা আজ খিস্তি আর খেউর সমৃদ্ধ। লজ্জা হয়, শুনে দেখে লজ্জা হয়... কোথায় রফিক, কোথায় জব্বার স্মৃতি হাতড়েও হয়তো খুঁজে পাবো না, জাতীয় মাতৃ ভাষা দিবসে দু ফোটা আলতা ছিটিয়ে, গোলাপের পাপড়ি ছড়িয়ে আর “আমার ভায়ের রক্ত রাঙানো” লাউডস্পীকারে বাজালেই সম্মান জানানো হয় কি? কই তেমন টা আমি শুনিনি, আর জানিও না। মহা সঙ্কটে আজ আমাদের বাংলা ভাষা, হিন্দী আর ইংলিশের দৌলতে, ভুলতে বসেছে, নিজের মাতৃভাষাকে বাঙালী। আমরা অনুকরণপ্রিয়, সে আদিকাল থেকেই তাই বলে নিজের ঐতিহ্য, নিজের সংস্কৃতিকেই দুমড়ে মুচড়ে ফেলতে হবে? কি জানি? তবে শফিউরদের সেদিনের আত্মবলিদান কাদের জন্য ছিল্? বলতে পারবে কি? আজ একজনকে টানা পাঁচ মিনিট বাংলা শব্দে কথা বলতে বললেই হোঁচট খাবে। স্বরবর্ণ, ব্যঞ্জনবর্ণ ভুলতে বসেছে, ইংলিশ এ্যালফাবেট সেদিকে ঝড়ের গতিতে। অমর একুশে আজ কি সত্যিই অমর??? কিচ্ছু বলার নেই আর, যা ক্ষোভ উগরে দিলাম। বাদ বাকী তোমাদের ভাববার...
তোকে না আগেই বলেছি, তুই সামনে এলে হৃৎপিন্ডের ধুকপুকুনিটা হাজার গুণ বেড়ে যায়। ছুটে বাইরে বেরিয়ে আসতে চায়। তোর সাথে প্রতিবারই মনে হয়, প্রথম দেখা। আমার মনে প্রাণে এক হিন্দোল কেন তুলিস বলতো? রাস্তার এক পাশে বাইকটা রেখে আলতো হাসির জোয়ার আনা তোর আমার স্বভাব হয়ে দাঁড়িয়েছে বুঝি। শত লজ্জা হাজার ভয়ে ভীত তুই। তবু দেখা না করলেই নয়। সাইকেল ধরে তোর দাঁড়ানো আর বিকালের স্বর্ণালী রোদ তোর চোখে মুখে। যেন রঙীন প্রজাপতি। দেখ তুই না মন ভালো করা এক দাওয়াই। সে তুই যা-ই বল না কেন! তোর সাথে একবারের ঐ মিনিট পাঁচের দেখাতেই মনে প্রাণে এক অন্য আবেশ আনে। সেটা তুই মানিস বা না-ই মানিস। তোর সাথে ছায়ার মত লেগে থাকা আর নিরাপদে এগিয়ে চলার জন্য জোঁক হতেও রাজি। বিশ্বাস কর তোর জীবনের চলার পথে গোলাপ পাঁপড়িতে ভরিয়ে দেব। কন্টকহীন পথে তোর কোমল পা রাখিস। রাখবি তো?
ভারতীয় ইতিহাসে মোট চার বার বৌদ্ধ সঙ্গীতী বসে। তা মনে রাখার সহজ উপায় বাতলেছি, এক ছড়ার মাধ্যমে। ================================================= "মহাকাশে শত্রু রাজে/ সব কালা বৈশালী/ পুত্ততিস্য শোক পুত্র/ অশ্ব বসু নিষ্ক পুরী।" ================================================= ১) মহাকাশ্যপের সভাপতিত্বে অজাতশত্রুর আমলে রাজগৃহে (৪৮৩ খ্রীঃ পূঃ), ২) সবকামির সভাপতিত্বে কালাশোকের আমলে বৈশালীতে (৩৮৩ খ্রীঃ পূঃ), ৩) মোগালিপুত্ততিস্যের সভাপতিত্বে অশোকের আমলে পাটলীপুত্রে ( ২৫০ খ্রীঃ পূঃ) এবং ৪) অশ্ব ঘোষ ও বসু মিত্রের সভাপতিত্বে কণিষ্কের আমলে পুরুষপুর (৭২ খ্রীঃ)।
তোর জন্য রঙ এনেছি, হোলি খেলব, দুজনে মিলে হোলি খেলি, আবীর এনেছি। এখানে দেখ, কত কিছু, পসরা নিয়ে বসেছিল দোকানী। সব এনেছি, পটল-মাথাফাটা-সোনালী, সঙ সাজতে হবে যে। ঐ ঐ প্যাকেটে দেখে নে, তোর পরনের জামা এনেছি, আমার পাঞ্জাবী। তুই বলেছিলি, মনে আছে? আমি নাকি ছেঁড়া জামা পরে হোলি খেলি সেটা তুই চাস না। এই দেখ আমি টুপি এনেছি, কি সুন্দর মানিয়েছে, না রে! বসন্ত উৎসবে মাতব সবাই। এই দেখ না, মিষ্টি এনেছি, তোর পছন্দের রসকদম। আমার কপোল বেয়ে জল গড়াচ্ছে, মোছাবি না তুই? মোছাবি না বল? এই তুই মোছাবি না? প্যাকেট থেকে রজনীগন্ধার মালাটা শ্যামলীর ছবিটাতে চড়িয়ে, চোখের জলটা একবারের জন্য মুছে নিয়ে চেয়ারে বসে চোখ বুজি।
Image
তোমারে দেখে চমকেছে পিলে শয়তানও হার মানে চেহারাতে বিভৎস কি, এরকমও হয়? ভালোবাসার অর্থ বোধগম্য নয়। তোমার ছবি দেখে ঘুম পাড়িয়েছি অবাধ্য দুরন্ত শিশুটিকে। চুপসে গেছে, গুটিয়ে নিয়েছে সে। আমি ঘুম ভুলেছি, স্বপ্নে শুধু ছবি ভাসছে, অবিরত। জানিনা কে তুমি? প্রশ্নেরা অবিরাম খাচ্ছে ঘুরপাক। এ কি কোন আদৌ দৈবদুর্বিপাক?????
তোকে বোধ হয় সত্যিই ভালোবেসে ফেলেছি। তুই বিশ্বাস করিস আর না-ই বা করিস। ধুকপুকুনিটা কিন্তু বেড়েই চলেছে দিন কে দিন। মিঠে কড়া খুনসুটি আর তোর সাথে কাটানো মুহুর্ত হানা দেয় অবচেতনে। দুর্মূল্য চোখের জল..
মানুষ যখন চাপা পড়ে ভেসে যায় রক্তে দুধার। যেখান থেকে সমন আসে মৃত্যুর। বালি পাথরে করে গলাগলি। কালো পিচ ধুইয়ে দেয় সাধারণ পথ চলতি মানুষের রক্ত। নিশ্চুপ নির্বিকার হয়ে বসে থাকা যেন মাথা ঠুকে দেওয়ার সমান। মানুষের পাশে না দাঁড়াতে পারার যন্ত্রণা খেতে থাকে কুরে কুরে। যদি সেই নিষ্ঠুর সময়ে নোংরা রাজনীতির রঙ ছিটোতে নেমে পড়ে একে একে। কোথায় থাকে আর মানবিকতা? তোদের কাছ থেকে এর চেয়ে ভালো আশা করাটাও যে অন্যায়, সেটা বুঝিনি... মিডিয়াদের ন্যাকামোটা একটু বন্ধ হলে আমরা জনগন হয়তো খুশি হতাম....
এসেছে আবার গরম আবহাওয়া। উঁহু উঁহু রোদ্দুরের নয়রে পাগলা ভোটের রে। এই তুই ভোট দিবি না? তোর চাইতেও তোর ভোটের দামটা কিন্তু অনেক অনেক গুণ বেশী। আমরা আবার সেজেগুজে টুং করে একটা বোতাম টিপে আসব। ব্যস দায়িত্ব শেষ। ঐ টুকুই তো গণতন্ত্র। নিজের ল্যাজে নিজেরা আগুন দিয়ে শাখামৃগ সেজে টিভির সামনে বসব। কে যোগ্য আর কে যোগ্য নয় আমরা আজো জলছাপ দেখে বিচার করি রে। আমরা নাকি বুদ্ধিমান বলে দাবী করি নিজেদের। যেদিন দেখব কোন বুথে নোটা জিতেছে, বুঝব সেদিন মানুষ বুঝতে শিখেছে। আমরা আজো এডুকেটেড ইলিটারেট। কি রে তুই কি ভাবলি? ভাবলি কিছু?
অনাত্মীয় যুবকের সঙ্গে বেশীক্ষণ ঘরে একলা থাকলে লোকের বক্রদৃষ্টিতে পড়তে হবে মেয়েটির। সব জেনেও তোয়াক্কা করেনি ডেকে নিয়েছিলো সেদিন। কারণ, মনে পাপবোধ তার কাজ করেনি। ঝুলতে হল ওকে, ওড়নার ফাঁস নিয়ে। অপমান সহ্য হয়নি। কি আসে যায়? আজ সেই লোকেরাই ভুলে গেছে...শুধু ভুলতে পারেনি, সেই ছেলেটা, যার হাতে রাখী পরিয়ে ভাই বলে ডেকেছিলো, তাকে।
আজ তোকে খুঁজি আমার স্মৃতির পান্ডুলিপিতে অনেক অস্পষ্ট তোর মুখ মিশে চেনা অচেনাতে নতুন বন্ধু জীবনে এসেছে আসবে অনেকে আরও ভুলতে পারিনা তোকে বন্ধু অবসরে ভাসে মুখ আজও এইতো সেদিন সোনা ঝরা বিকাল বেলাতে মাঠে মনে হয়। বছর অনেক বন্ধু তবে গেল কেটে বেসুরো কন্ঠে গলা খুলে সেই গেয়ে যাওয়া গান সময় পেলেই সিগারেটে দম ফুকফুক টান আজকে বড় হাসির খোরাক ফেলে আসা সেই স্মৃতি ঠোঁটে ঠোঁটে তখন ব্যারিকেড প্রেমের পদ্য গীতি হারানো স্মৃতিকে কাছে টেনে রাখি বুকের মাঝে সময় পেলেই ডায়েরী উল্টে খুঁজে চলি অচেনাকে।
বর্ষবরণ করিতে হইবে, তোড়জোড় শুরু হইয়াছে।  এককালে রবীন্দ্র-নজরুল সন্ধ্যা আয়োজিত হইত। যুগ বদলাইয়াছে বায়সের তালে ঠেকা দিয়া বয়সও বাড়িয়াছে। অধুনা দেখিতেছি, বর্ষবরনে মধু গাইছে, চার বোতল ভোডকা... যুগান্তরে রবীনজরুল কেশ দাঁড়ি উৎপাটন করিতেছেন। খোল কর্তালের চল নাই বলিলেই চলে আসিয়াছে ডিজে। পক্ষপাতীত্ব করিতেছি না, স্বয়ং আছি কি না... ঐ বেবী ডল টা চালা। ১লা বৈশাখ
নতুন লাশ এসেছে লাশঘরে রামুকে এক বোতল দিলেই খুলে দেবে এক ঘন্টার জন্য। নিথর দেহটাকেও খুবলে খেতে ছাড়ে না নর পিশাচের দল...
তোর চোখের ভাষা জানিয়ে দেয় কি পুষে রেখেছিস নিজের মনে। কি এমন সে অব্যক্ত ব্যথা যাতে আমায় ঝলসে দিতে চাস, জানা নেই। নীল রঙা বিষে শিরায় ছুটছে রক্ত বিষের উদ্গারণ এবার লসিকায়...
এ কবিতা নয়... আমার নিলয় অলিন্দে ছুটে চলা রক্ত জানে, আমি কবি নই। মস্তিষ্কের সাহিত্য খন্ড জানে, এ শব্দচুরি নয়। হাতে চলতে থাকা লেখনী জানে, তাকে আজ ছুটতে হবে, কাটতে হবে আঁচড়। সে জানে আগা পাঁচ তলা ভাবনার লেশ মাত্র নেই। শুধুই ছুট,...... নিমেষে হারায় সাহারায় নিমেষে ষ্পর্শ এভারেস্ট ছুটে চলি ইউটোপিয়াতে কলমের নিবে চড়ে এলডোরাডোয় স্বর্ণ কুড়াই ইতিহাস চিতোরে। মস্তিষ্কের খন্ড বিখন্ডে ভেসে ওঠে বর্ণমালা, স্বর ব্যঞ্জনে সন্ধি প্রত্যয়ে শব্দ গড়ে অক্ষরমালা।
আমি বুঝিনি কবিতা তোমাকে, বুঝতে চাইনি আর চাইও না। কিছু এলোমেলো কৃষ্ণবর্ণের  পরপর বসা আর শব্দ সৃষ্টি, ভাবের পরিস্ফুটনে তুমি... শত মানুষের অন্তরের কথা প্রকাশ করেছ, আমি নই। তোমার আবির্ভাবে অজনা আবেশে লেখনী চালিয়ে গেছি মাত্র। রোজ যা দেখে চলেছি তাতেই যে তুমি লুকিয়ে, আমি বুঝিনি। কিভাবে তোমার প্রকাশ? বিস্মিত! জোনাকীর ঝিকিমিকি আর তারার মিটিমিটি তোমার কাছে সমতুল মনে হয়েছে। কবিতা তোমায় সত্যিই বুঝিনি... কপোল বেয়ে গড়ানো অশ্রু মুক্তাসম আমি যা কখনোই ভাবিনি। বুঝতে চাইও না আর....
ছন্দা তোমার ছন্দ পতনে কাঁদে গোটা বাংলা ছন্দা তোমার ফিরে আসা অনেক বড় পাওনা ছন্দা তোমার জয়ধ্বজা আবার ওড়াও বাংলায় ছন্দা তোমার গল্প বল আবার টিভির পর্দায় ছন্দা তোমার  পায়ের তলায় হিমালয় তথা বিশ্ব ছন্দা তোমার গল্প ছাড়া আমরা আজ নিঃস্ব ছন্দা তোমার জীবন জানি শান্তি নয় সে যুদ্ধ ছন্দা তোমার অদম্য সাহস মানে আবালবৃদ্ধ ছন্দা তোমার প্রত্যাবর্তন এই আমাদের কাম্য ছন্দা তোমার অভিযান হয়ে যায়নি ব্যর্থ.... ছন্দা গায়েন তোমার আশায় পথ চেয়ে বসে আছি...ফিরে এস তুমি ফিরে এস...
জানিস, আমার বুক জুড়ে এক ব্যথা অনুভূত হচ্ছে বেশ কদিন ধরে। তুই কি  বুঝিস না কিছুই! অবশ্য তোর বোঝার কথাও নয়। তুই তোর মত বাঁচতে চেয়েছিস, আমিই বোকা, যে আমি তোর চাওয়াকেই আমার চাওয়া বলেই ধরে নিয়েছি। হঠাৎ হঠাৎ মনে হয়, তোর ইগোর বেড়াজাল ভেঙে যদি আবার সেই হারিয়ে যাওয়া ঠিক তুই হয়ে ফিরে আসতিস...
এমন করে বছর বাইশ আবার নাহয় কাটুক দেখবি কেমন হারিয়ে গেছি, কেমন অচেনা অদ্ভূত। সময় বড়ই কঠোর হাতে দিচ্ছে দেখ কেমন পাঠ বদলে যাব আমি-আমরা চেনা শোনা পথ ঘাট স্মৃতি কেবলই জ্বলবে মনে, চির সতেজ সবুজ হয়ে সময় বইবে বুড়িয়ে যাব, মৃত্যুর পানে ধেয়ে হঠাৎ সাক্ষাতে তোদের সাথে জাগবে আবার সুপ্ত স্মৃতি থরে থরে থাকবি তোরা চিরভাস্বর মনের সরণীতে ভেবে দেখ আজ থেকে ঠিক বাইশ বছর পরে....
তুই যে ছিলিস আমার কাছে অনেক বেশী নাইট্রোজেনে হার মানে বাতাসে। ••• তুই যে আমার স্বপ্ন সফেনে ইচ্ছে অনেক, যাস মিলিয়ে। সেই ভাবনা ফ্যাকাশে। ••• আমি এখন কেউ- তোর নইরে, স্নানের ঘরের ভিজে তোয়ালে জলকণায় অশ্রু মিশে। ••• এখন তোর সেই আগের মতো ছুটে এসেই আঁকানো চুমো, স্মৃতির পাতাতে ভাসে। ••• আমার সাথী ভাঙা গীটার, তোর স্মৃতিতে আমার জ্বর। সঙ্গী মেডিসিনে। ••• একলা কাঁদি রাত দুপুরে সাক্ষী শুধুই চার দেয়ালে। জড়ানো পাশ বালিশ। ••• চলাচলের সেই যে গলি দাঁড়িয়ে একা ভাবতে থাকি যদি আবার ফিরিস ••• তোর দেওয়া গোলাপ খানি ডায়েরী চাপা শুকনো পাঁপড়ি ভেজা চোখের নালিশ...
Alma Mater ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি নেমেছে, সোঁদা গন্ধের মাদকতা বাতাসে। এক অজানা অচেনা আবেশে ভর করেছে। তোর কথা মনে পড়াচ্ছে খুব। মনে পড়ে তোর সেই কথা গুলো? বৃষ্টির দিনে স্কুলে... জানলা গলিয়ে টুপ টুপ বৃষ্টি ফোঁটা হাতে নিয়ে, সেই ভীষন ছেলেমানুষী। কি মিষ্টিই ছিল বল, সেই দিন গুলো? ক্লাসের ফাঁকে পিছনের বেঞ্চে খুনসুটি। ঝুমুর তালে বেঞ্চি বাজিয়ে হেসে কুটিকুটি। স্যরের গলা নকল করা, ম্যাডামদের চলা তোদের হাসিয়ে নাচের কাকুর মত করে হাঁটা। সিঙাড়া নিয়ে হুড়োহুড়ি আর আইসক্রীম ছুঁড়ে মারা সেদিনগুলোর মিঠে স্মৃতিতে আজ অশ্রু গড়িয়ে পড়া। তোদেরও কি এমন হয়?
জামাই ষষ্ঠী ( ১০ বছর আগে ও পরে) ***************************************** - কি গো স্বপন দা ধুতি পাঞ্জাবী গলিয়ে এত সকাল সকাল কোথায় বেরোলে? - ভাইরে সে কি আর কম ঝক্কি। দুদিন বাদে ষষ্ঠী, মেয়ে জামাইকে নেমন্তন্ন টা বেলায় বেলায় সেরে আসি।  - তা তার করে দিলেই তো পারো। - না রে যদি জামাই ভালো মনে না নেয়, তার চেয়ে বরং নিজে গিয়েই নাহয়.... ***************************************** - ও স্বপন দা বলি জামাই ষষ্ঠী তো চলে এল। কই মেয়ে জামাই কে তো বলতে গেলে না! - ভাই চাপের কোনও কারণ নেই, মেইল পাঠিয়ে দিয়েছি। - বাব্বাহ? মেইল? জামাই আসবে তো? - না আসলেও চাপ নেই। ক্যুরিয়ারে আম, খই, কাঁঠাল, জামা, শাড়ী সব পাঠিয়ে দেব। হাত খরচের জন্য অ্যামাজন গিফট কার্ড। আর বাদবাকী ব্যাপারটা স্কাইপে সেরে নেবো।
আজ তোর দিকে আঙুল তুলে বলতে ইচ্ছে করছে, " আদতে তুই কি বদলাবি না?" তোর শরীরে বয়সের ছাপ পড়েছে, দেখতে তেমনই বড় হয়েছিস, তবে এটা মানতে বাধ্য তুই মনের দিক থেকে সেই ল্যাংটো শিশুটির মত। থাক সে, তোকে যত দেখি ততই বিস্মিত হই এই তো সেদিনও তোর কত হইহই রইরই আজ এক্কেবারে নির্বাক পাথরের মত আচরণ সত্যি চোখের কোণে জল আনে। অকারণ এক ক্ষোভ দুঃখ যা বলিস উঁকি দেয়, তোকে বড় স্নেহ করি যে, তোর অনুপস্থিতি দগদগে ক্ষতের মত মনে অক্ষয় রেখা টেনে দেয়। ভাবিনি কখনো ছোট্ট ভুলে কেউ এমন শাস্তি পায়...
____________বাওয়াল________________________ তাজা রক্ত প্রাণে যখন, কিছুই না মানার বয়েসে, তোয়াক্কা থোড়ি। এই বয়সে যদি মনে রাখার মত কিছুই যদি না করি, তবে কবে আর করব? মাথায় দুষ্টুবুদ্ধি খেলে গেল, বাওয়াল মাচাতে হবে? তবে কোথায়? আমরা যারা আছি, তাদের প্রত্যেকেরই গুড বয় ইমেজ আছে, হাজার চেষ্টাতেও নিজেদের “র” করতে পারবো না। তাই এলাকা তে কিছু নয়। চল দূরে আমাদের এলাকা ছেড়ে। বেরিয়ে পড়া গেল, দল বেঁধে তিনটে বাইক, সঙ্গী সাত, গন্তব্য চাঁদপাড়া।  বাড়ি থেকে বেরিয়েই বাধা টপকালাম দুই বাসের পাশ কাটিয়ে মাঝ দিয়ে বাইকে হুস। ফুশ হয়তো হয়েই যেতাম, ব েআক্কেলেটার জন্য। বনগাঁতে পালের গোদার সাথ নিলাম। শুনলাম হেলমেট ছাড়া দের দুকানে টান দিচ্ছে মামারা। সুযোগ বুঝে টেনেই বেরোনো গেলো, তবে কপালে যদি ফেরা থাকে খন্ডায় কে! হতে হতে বেঁচেছি ২-৩ বার। একবার এক বুড়ো গাড়ির উপরে হুমড়িই খাচ্ছিলো, এক সাইকেলে এক নির্বোধ, সর্বোশেষে এক ভীতু যুবা, হোই হোই হোই আওয়াজেই যায় যায় আর কি, এ্যাক্সিডেন্ট না, দূরসিডেন্টই পগার পার হচ্ছিল। যাই হোক শেষমেশ দল বেঁধে হোটেলে ঢুকলাম। হঠাৎ সেখানে দেখা হয়ে গেল পুরনো স্কুল ফ্রেন্ডের সাথে, সে নাকি তার বান্ধব...
ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি নেমেছে, সোঁদা গন্ধের মাদকতা বাতাসে। এক অজানা অচেনা আবেশে ভর করেছে। তোর কথা মনে পড়ছে খুব...ইচ্ছে করে সময় কাটাতে তোর সাথে, ঘড়ির কাঁটার পরোয়া না করে...
রোজ রোজ একই ছবি তুলতে মন চায় না। সেই যে একঘেয়ে খানিক ময়লা রঙের বিচ্ছিরি এক বিকেল। সেই একই শালিকের দলের কিচিমিচি, এক সাথে ঘরে ফেরার পালা তাদের। সূর্যের ঐ লাল আভা তো আর পাইনা, ধোঁয়ায় ভরা নোংরা এক কাপড়ের মত উড়তে দেখি মনে হয়। ক্যামেরার খচখচানিতে মেকি ঝলকানী অনেক হয়েছে। একটু হলুদ একটু বেগুনী একটু সবুজ রঙ টেনে অতি বাস্তব ফ্যাকাশে বিকালও যেন মোহময়ী হয়ে ওঠে ছবির দোকানের দৌলতে। এই যে একঘেয়ে চলছে বিকাল আসা দুপুরের পর। ভালো লাগছে না, রাতের পর দুপুর আসুক সন্ধ্যার পর সকাল। এই ফেজ টা বদলাতে হবে। ইলাস্ট্রেটর ইনস্টল করে কে এই নিয়মটায় রঙের আঁচড় দিবি? ফিজিক্স কেমিস্ট্রি বা ম্যাথ যাই বল ওরা হাত উঁচিয়ে আছে, পারবে না বলে দিয়েছে। শুধু তুইই পারবি এই রংচটা সিস্টেমের বদল আনতে। সে বিশ্বাস আছে তাই তোকে ইমেল করলাম...
মন খারাপ! মন খারাপ!! মন খারাপ!!! অনেক তো মন খারাপ করলাম। কাঁদলাম, চুপচাপ নিভৃতে বসে থাকলাম। সেই যে আমার মুদ্রাদোষ গুণগুণ করে সুর ভাজা বকবক করে কান মাথা ধরিয়ে দেওয়া... না রে, সেই চেনা চেহারায় আজ মেলাতে পারবি না। সত্যি বলছি, রাগ অভিমান বা ক্ষোভ শুধু কি তোর একারই থাকতে আছে, আমার কি নেই? তোর সেই স্মৃতি হানা দেয়, মুহুর্তের জন্য চোখের কোণে জল বিন্দুর সঞ্চার করে। আপোষ করা আমার ধাতে কস্মিনকালেও ছিল না, তবু সেপথে হাঁটতেও দ্বিধা বোধ করিনি। ছাড় সে কথা... তোর সাথে কথা বলতে চাই, আকারে ইঙ্গিতে বুঝিয়েছি বুঝিসনি অবুঝের মতো এড়িয়ে গেছিস। আজ তোর চোখে আঙুল দেখিয়ে বলছি, আমি ভালো আছি...ভালো থাকবো....!!!
অমরত্বের প্রত্যাশা করেননি কবীর সুমন জানিয়ে দিয়েছেন অনেক আগেই। বেলা বোসকে নিয়ে ডিপ্রেশনে ভোগা অঞ্জন দত্ত চাকরী পেয়ে গেছে। নিজের প্রাওরিটি চেয়ে নিয়েছে অনুপম। সবার জীবনের একটা সময় আসে, সেই সময়কে নীলাঞ্জনা নামে নচিকেতা ডেকে গেছে এক দশক আগে। প্রেমে ব্যর্থ শিলাজিৎ উড়িয়ে দিয়েছে ভালোবাসার মানুষটিকে। অনিন্দ্য তো ক্যাবলার মতো তাকিয়ে থাকতো ঘন্টার পর ঘন্টা। সুরজিৎ রাস্তার মোড়ে আঁকিবুঁকি করেও তার ভালোবাসার দেখা পেলো না। রূপঙ্কর তার প্রিয়তমার জন্য অপেক্ষাতে। মহিনের ঘোড়া তারার কাছে পৌঁছতে আজো ব্যর্থ। সব কিছু ছাড়িয়ে রূপমের এখনো নীল রঙই পছন্দের....
কথায় জীবনে সুখ আনে কথায় গানে সুর আনে কথায় ভাঙা বুক লাগে জোড়া... ••• ••• ••• ••• ••• তুফান আনে চায়ের দোকানে কথা বুকের ভিতর ফাটল ধরায় কথা একবার ফস্কালে ফেরৎ আসে না কথা...
_______মুহুর্তের ভুল_______ মুহূর্তের ভুল ছিল সবই, যা বলে এসেছি এতদিন। লয় মেলাতে পারিনা হারমোনিয়ামে, মন্দ্র-মধ্য-তারে গুলিয়ে ফেলছি বারংবার। এ তাল-লয়-ছন্দ সময়ের, যেখানে দাদরা-কাহারবা -রা অর্থহীন। জীবন মোড় নেয় নতুন পথে, কিছু না বলা কথা বলতে চেয়েছি মাত্র, বলতে পারিনি..... ধুস! তার চেয়ে ঢের ভালো এই নীরবতা....
________মনে করিস না______ মনে করিস না বুকের ভিতরের আগুন আজ নিভে গেছে। সমহিমায় জ্বলছে আজও... পুড়িয়ে মারছে, কালো বিষ বাষ্পে ছেয়ে ধরছে ধীরে ধীরে... ফাগুনের আগুনে পুড়তে চেয়েছি, পুড়ছি তোর চোখের ঘৃণায়। ক্ষত-বিক্ষত শরীরে তোর অপমানের চাদর জড়িয়েছি মাত্র। আজো বাজিস তুই, শঙ্খধ্বনির মতোই। ধড়ফড়ানি বেড়েই চলে সাথে অসহনীয় কষ্টটা। ফাঁকা মাঠে দাঁড়িয়ে কুয়াশার ক্যানভাসে ছবি আঁকি তোর। চোখের দৃষ্টি ঝাপসা হয়, সারা আকাশ জুড়ে শুধু তুই... তাল পাকিয়েই পড়ে রইল, বুকচাপা কান্নাটা... ©  বাসব চক্রবর্ত্তী  ©
Image
__________ফেরা______ _ বাড়ি ফেরা? না না এখনই কেন? সবে তো এলে, দু দন্ড বসি চলো সবুজ ঘাসের চাদরে... বিকেলের এই নিভু আলোতে নির্জনতা ভেঙে চলি আমরা বরং। তোমার আঙুলে লেগে থাক আমার আঙুল... কি হল? ভালো বাসা খুঁজছো বুঝি, ভালোবাসাকে দূরে ঠেলে? সব কৃপণতা চুরমার করে বেহিসেবী হও। পৃথিবী আজ আমাদের দূরে রাখি... ভয় পাচ্ছো? কি হবে ভয় পেয়ে? দেখলে তো, ঝোড়ো হাওয়া এল মৌসুমীর মতো তছনছ করে দিয়ে গেলো সব..সব..সব কিছু... আজ বাইশ বছর পরে, তুমি আমি আজ আবার হাঁটছি, হেঁটেই চলেছি.. লোকে যা ভাবে ভাবুক, ভালোবাসাতে পরোয়া করি না। নতুন করে বাঁচতে শিখি দুজনে... চলো আবার আজ ঝালমুড়ি খাই... ©  বাসব চক্রবর্ত্তী  © ০৯/০৮/২০১৬
Image
____________রাত তোমাকে___________ রাতকে তোমরা অন্ধকার ভেবে এসেছ এতকাল। আদতে কি তাই? তারও নিজস্ব রং আছে  স্বকীয় ধর্ম আছে। রাত মানেই কালো নয়... রাতেরও মন আছে, মনে প্রেম আছে। বুকে ব্যথা আছে, হৃদয়ে ছবি আঁকে। এমনও রাত আছে বিস্ময় তার চোখে, এমনও রাত আছে একাকী সে জাগে। ব্যর্থ প্রেমিকের মত সেও তারা গোনে। উন্মাদের মত সে ও উদ্দাম হাসি হাসে। কখনো স্তব্ধ হয়, ক্লান্তি তার চোখে ভাঙা স্বপ্নে মেঘেদের নিয়ে আনমনে জলরঙে তুলি টানে। একখানা ব্লেড টেনে যেন চিরে ফেলে তার শিরা উপশিরা একে একে। মেঘলা আকাশে ভাঙা চাঁদ যযাতির যাচনা নিয়ে আজও বেঁচে থাকে। রাত বাড়ে... রাত কখনো মিশে যায় ডিমলাইটে কখনো জ্যোৎস্নায়, কখনো জোনাকীতে। মুহূর্তরা গোপন পৃথিবীর টানে তলিয়ে গেলে, ফণা তুলে ওঠে অন্তিম প্রহর... ©  বাসব চক্রবর্ত্তী  ©  ১৪/০৮/২০১৬
Image
___________একটু ঝাঁঝালো__________ ছায়া ও রৌদ্রের সাহিত্যরস নিঙড়ানো চলছে, যুগ যুগ ধরে। কি এমন মধু মাখানো জানিনা। পার্কে যুগলের প্রেম রগরগে বার্তালাপ, প্রজাপতির উড়ে চলা, ধুলো ওড়া ধূসর বিকালের সেইসব সন্ধ্যা। কথার বাঁধুনীর মৃত্যু। কবিতা উল্টোপথে হাঁটে। স্বপ্ন আঁকো পারলে বারবার আঁকো ইরেজার দিয়ে মোছো। কাটাকুটিতে মেতে ওঠো, অক্ষরের, শব্দের, বাক্যের। পূর্ণতা পাক তোমার মনের না বলা ভাবগুলো। কখনো মুখ ফুটে টু বলার সাহস দেখায়নি যারা আজ মাথা উঁচু করে সরব হতে পেরেছে তোমার লেখাকে সামনে রেখে। না কোন খিস্তি-খেউর নয়, সাহিত্যের কঠিন বাক্যবিন্যাসে নয়। তোমার সহজ সরল সাবলীল ভাষায়। সমুদ্র-শাসন হেলায় তুচ্ছ করে বাঁচে যারা বেঁচে থাকার তাগিদে... স্বাধীনতার স্বাদ বারুদের গন্ধে মিশে যায়। শৈশব যাদের কাটে চায়ের দোকানে স্বাধীনতা অর্থহীন ওদের কাছে। স্বাধীনতা দাসত্বের সমান... স্বাধীনতা রাজনীতির সাধারণের নয়...!!! ©  বাসব চক্রবর্ত্তী  © ১৫/০৮/২০১৬